কাউখালী প্রতিনিধি: পিরোজপুরের কাউখালীতে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশক্রমে বায়োমেট্রিক হাজিরা ডিভাইস ক্রয় করতে নানা অনিয়ম ও সরকারি অর্থ লুটপাট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশনা না মেনে দুর্নীতিবাজ একটি মহল মিলেমিশে বায়োমেট্রিক হাজিরা ডিভাইস স্থাপনের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ এখন প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের মুখে মুখে। এ নিয়ে সম্প্রতি ডিভাইস সাপ্লাই দেওয়া কোম্পানি এশিয়ান ইলেকট্রনিক্স এর দেওয়া বায়োমেট্রিক হাজিরা ডিভাইস স্থাপনের বকেয়া টাকা প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে ২৯ শে জুলাই ২০২৫ তারিখে চিঠি প্রদান করেন। চিঠি অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই সমস্ত অনিয়মের বিষয় জনসম্মুখে উন্মোচিত হয়। ২০১৯ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন শাখা দুই থেকে দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঠিক টাইমে স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয় করার নির্দেশ প্রদান করেন। এ সময় কিছু সুবিধাভোগী স্বার্থন্বেষী কোম্পানি এবং সরকারি কর্মকর্তা ও শিক্ষক নেতারা সাধারণ শিক্ষকদের কাছে উপস্থিত হয়ে কম টাকার নিম্নমানের বায়োমেট্রিক হাজীরা ডিভাইস প্রদান করে অধিক মূল্য গ্রহণ করে।অথচ কাউখালীতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাসিক সমন্বয়ে মিটিং এ শিক্ষা অফিস এবং কয়েকজন শিক্ষক এর মধ্যস্থতায় কাউখালী ৬৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কোম্পানির মাধ্যমে ক্রয় করতে বাধ্য করেন।
শর্ত ছিল, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক সকল মালামাল দেওয়া হবে। একযোগে সকল স্কুলের ডিভাইস গুলোকে ওয়াইফাই সংযোগের মাধ্যমে ডিজিটাল হাজিরা কার্যক্রম চালু করে কোম্পানি তিন বছরের সকল সার্ভিস এই টাকার মধ্যেই নিশ্চিত করবেন। এই কোম্পানি স্ট্যাম্পে সকল শর্ত লিখে স্বাক্ষর করার পরও ৬৬টি স্কুলে ১২ লক্ষ টাকা মূল্যে নামে মাত্র ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইসটি স্থাপন করেন। যে হাজিরা মেশিনটি স্থাপন করা হয়েছে তার বাজার মূল্য ৪/৫ পাঁচ হাজার টাকা হিসেবে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা।অথচ চুক্তি অনুযায়ী অন্য কোন মালামাল ওই কোম্পানির প্রদান করে নাই। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষকরা বলেন, ২০১৯ সালে বায়োমেটিক হাজিরা স্থাপনের সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে শিক্ষা অফিসারদের উপস্থিতিতে সকল শিক্ষকদের এশিয়ান ইলেক্ট্রনিক্সের কাছ থেকে ১৯ হাজার টাকা মূল্যে এই মেশিন কেনার জন্য কয়েকজন শিক্ষক নেতারা বলেন। সেই অনুযায়ী সকল শিক্ষকরা শিক্ষা অফিসে উপস্থিত হয় টাকা প্রদান করেন। অথচ ৪-৫ হাজার টাকা দাম একটি হাজিরা মেশিন স্থাপন করলো ৫-৬ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও চুক্তি অনুযায়ী অন্যান্য মালামাল প্রদান করেননি ওই কোম্পানি। যার ফলে আজ পর্যন্ত ওই মেশিন কোন কাজে আসছে না। বরং পরিত্যক্ত অবস্থায় সকল স্কুলে পড়ে আছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিবুর রহমান জানান, এই ডিভাইস ক্রয়ের সময় তিনি ছিলেন না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন, এই বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা ছিল না। চুক্তি মোতাবেক সকল মালামাল দেওয়া না হইলে তদন্তের মাধ্যমে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।